নিউজ ডেস্ক।।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। এ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়লে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২৫ নেতা–কর্মী আহত হন। এ সময় বিএনপির নেতা–কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশের দুই সদস্যও আহত হন।
আজ শনিবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার খাদঘর ও চান্দিনা উপজেলার কেরনখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চান্দিনা, দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেলে কুমিল্লা উত্তর জেলা কমিটির উদ্যোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুরাদনগর উপজেলার গোমতা এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। কিন্তু ওই স্থানে পুলিশ অনুমতি না দেওয়া তাঁরা চলে আসেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দেবীদ্বার উপজেলা খাদঘর ও চান্দিনা উপজেলার তীরচরে। সেখানে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ আবারও বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে নেতা–কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন চান্দিনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতিকুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক আজহার উদ্দিন, কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা দলের সভাপতি সুফিয়া বেগম, কুমিল্লা জেলা যুবদল নেতা শাহীন, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ বাবু, দেবীদ্বার উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রবিউল আউয়াল, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবদুর রহমান, বিএনপির নেতা রমজান হোসেন এবং মহিলা দল নেত্রী তাছলিমা বেগম ও আলেয়া বেগম। এ ছাড়া বিএনপির নেতা–কর্মীদের ইটপাটকেলের আঘাতে চান্দিনা থানার কনস্টেবল সিপন হোসেন ও হাসান পারভেজ আহত হন।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা দলের সভাপতি সুফিয়া বেগম, সদস্য তাছলিমা বেগম ও আলেয়া বেগম দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিত্সা নিতে আসেন। এর মধ্যে তাছলিমা বেগমের মাথা ও হাতে বন্দুকের বাটের আঘাতে মারাত্মক জখম হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি বমি করায় চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।
জানতে চাইলে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. শাহজাহান মোল্লা বলেন, পুলিশ গোমতা এলাকায় কর্মসূচি করতে গেলে প্রথমে বাধা দেয়। পরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দেবীদ্বার উপজেলার খাদঘর এলাকায় পদযাত্রা করতে চাইলে পুলিশ বিনা উসকানিতে লাঠিপেটা করে ও গুলি চালায়।
দেবীদ্বার উপজেলার ভানী অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, মহাসড়কে যান চলাচল বিঘ্ন ঘটায় পুলিশ ব্যবস্থা নিতে গেলে ঝামেলা হয়।
তবে এ বিষয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান সরকার বলেন, ‘পুলিশ বিনা উসকানিতে ঝামেলা করে। আমরা কোনোভাবেই মহাসড়ক অবরোধ করিনি।’
এ বিষয়ে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাহাবুদ্দীন খান বলেন, বিএনপির নেতারা পদযাত্রার নামে মহাসড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে উশৃঙ্খলতা করছিলেন। এ সময় চান্দিনা থানা–পুলিশ ও দেবীদ্বারে ভানী ক্যাম্প পুলিশ তাঁদের মহাসড়ক থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁরা পুলিশের ওপর হামলা করেন। চান্দিনা থানার দুই পুলিশ সদস্যকে আহত করেন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ১৩ রাউন্ড রবার বুলেট ছুড়ে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page